NRC এবং CAA (সাম্প্রদায়িকতা-বিস্থাপন-নাগরিক)
Pata hay,bohot sal pehle eha ek jungle hota tha,
Ghana bhayanak jungle
Phir eha ek shahar bann geya
Saf-sutre makan,sidhe raste
Sabkus tarike se hone laga
Par jis din jungle kata usdin parindey ka ek jhund
Ihase hamesha ke liye urr geya
Kabhi nehi lauta.......
'৪৭ এর দেশভাগ এবং এর পূর্ববর্তী ও পরবর্তী বিভিন্ন সময়ে মানুষকে রাজনৈতিক কারণে বিস্থাপনের শিকার হতে হয়েছে। এর আগে মানুষ ও অন্যান্য পশুপাখি দেশ বদলাতো,জায়গা বদলাতো প্রাকৃতিক কারণে।'৪৭ এর দেশভাগে ভারতীয় উপমহাদেশ জুড়ে একটা বিশাল সংখ্যক জনগোষ্ঠী বিস্থাপিত হয়। সীমান্তবর্তী অঞ্চলগুলোর মানুষ এই দগদগে ঘা এখনো বয়ে বেড়াচ্ছে। অনেকের আত্মীয়-স্বজন রয়ে গেছে কাঁটাতারের ওই পাড়ে। অনেক মুসলিম ভারত থেকে পাড়ি জমায় পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানে। কেউ কেউ রয়েই যায়। আবার হিন্দুরা পাকিস্তান থেকে চলে যায় ভারতে। অনেকেই এই বিভক্তি মেনে নিতে পারেন নি,এর ক্ষত বয়ে বেড়াতে হয়েছে অনেককেই। সাদাত হোসেন মান্টো কিংবা ঋত্বিক ঘটকও বয়ে বেড়িয়েছেন এই ক্ষত। কাপ্তাই বাঁধ নির্মানের সময় (১৯৬০-১৯৬৫) প্রায় একলক্ষ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়। এর ৭০ শতাংশই চাকমা জনগোষ্ঠীর। প্রায় চল্লিশ হাজার মানুষ আশ্রয় নেয় ভারতের অরুণাচল প্রদেশে যাদের চিহ্নিত করা হয় প্রাকৃতিক কারণে সৃষ্ট শরনার্থী হিসেবে। বাংলাদেশ কিংবা ভারত কোন দেশই নাগরিকত্ব দেয়নি তাদের। আজও তাদের গানে যখন বন-পাহাড় কাঁদে তখন শোনা যায় তাদের বিস্থাপনের করুণ কাহিনি। পৃথিবীব্যাপী রয়েছে বিস্থাপনের ইতিহাস ও ক্ষত। এই বিস্থাপিত মানুষেরা আর কখনোই মূলস্রোতে ফিরে আসতে পারেনি। সিরিয়া,ইয়েমেন,আফ্রিকা,ইয়োরোপ, মায়ানমার সবখানেই বিস্থাপিত মানুষের কান্না এক। আবার কখনো কখনো চিত্র উল্টোটাও দেখা গেছে। ভারতীয় উপমহাদেশে আগত আর্যরা নিজেদের শ্রেষ্ঠ দাবি করে এই অঞ্চলের আদিম অধিবাসীদের নিচু শ্রেনীর ঘোষণা দিয়ে বসলেন। এই অঞ্চলের অন্ত্যজ ডোম,হাড়ি,চন্ডা,কোল ও অন্যান্য আদিবাসীদের নমঃশুদ্র বানিয়ে দিলেন। এ ঘটনা ঘটেছে আফ্রিকাতেও, কালো মানুষদের অধিকার করে বসল শাদারা। রাস্তাফারাই রা তাদের গানে গাইতে লাগল 'জাহ' এর কথা।যে যিশু কালোদের,নিপীড়িত মানুষের।একইভাবে এই ভারতীয় উপমহাদেশেও কেউ কেউ নিজেদের লুকিয়ে ফেলল অরণ্যে বিলাপ করতে লাগল মহিষাসুরের জন্য। তবে কেউ কেউ জাতে ওঠারও আপ্রাণ চেষ্টা করে গেল। আর্যদের মিশ্রণে আংশিক আর্য হয়ে উঠল। পরিচয়বাদী এই রাজনীতি আজোও থেমে নেই। যে মানুষেরা ভাবত প্রকৃতি ও মানুষ এক তাদের দমাতে ব্যবহার করা হল ডারউইন তত্ত্ব 'মানুষ তার অস্তিত্বের জন্য প্রতিনিয়ত প্রকৃতির সঙ্গে লড়াই করে।' অথচ এটিি একটি ভ্রান্ত্ ধারণা, মানুুষের অস্তিত্ব রক্ষার সর্বত্তোম উপায় হচ্ছে প্রকৃতির সাথে সহাবস্থানে চলা। নাহলে তো বুঝতেই পারছেন গ্লোবাল ওয়ার্মিং,দূষণ সহ অনেক সমস্যা অথচ এইসব যারা প্রাচীনকাল থেকেই জানতেন তাদের আমরা মানুষের উপভাগ বানিয়ে দিলাম,তারা হয়ে গেলেন ছায়া মানুষ। পৃথিবীব্যপী মানুষ বার বার বিস্থাপিত হয়েছে,শরনার্থী হয়েছে যার একটা মূল কারণ পরিচয়বাদী রাজনীতি। চীনে উইঘুর,মায়ানমারে রোয়াইংগা, জার্মানিতে ইহুদী, আমেরিকায় রেড ইন্ডিয়া,বাংলাদেশেও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়, আফ্রিকার কালো মানুষ হেয় হয়েছে, নির্যাতিত হয়েছে এমনকি ভিটেমাটি ছেড়ে বাস্তু পরিচয়হীন হয়েছে। এই বাস্তুহীন মানুষেরা আবার কোথাও গিয়ে আবাস গড়ে তুলেছে, ফসল বুনেছে, বাঁচার স্বপ্ন দেখেছে যে মাটিতে গিয়েছে তাকে ভালবেসেছে। ভারতে যারা শরনার্থী হয়েছিলেন তারা সে মাটিতে নিজেদের সন্তানের নাড়ি পুতেছেন। গত সত্তুর - আশি কিংবা একশো বছর সেখানে আছেন অথচ আজকে নতুন করে আবার তাদের সামনে শরনার্থী হবার হুমকি! আচ্ছা বলুন তো
মানুষ কয়বার তার ঘর হারায়
কতোবার ভাঙা স্বপ্ন সাজায়?
আমরা যখন সভ্য পৃথিবীর কথা সভ্য সমাজের কথা বলছি তখনকি আমরা শুধু মানবিকতা বিবর্জিত প্রযুক্তি নির্ভর সমাজকেই সভ্য বলব? ভারতে যে, এন আর সি এবং সি এ এ করা হচ্ছে এর ভিত্তিটা কি? আচ্ছা যারা এন আর সি এবনভ সি এ এ করলেন তারা কি নিজেদের অমিশ্রিত রক্তের অনার্য অন্ত্যজ ডোম,হাড়ি,কোল,চন্ডাল দাবী করতে পারবেন?তারা কি বলতে পারবেন এই ভূমির প্রাচীনতম অধীবাসী দ্রাবিড় কিংবা অন্যান্য জনগোষ্ঠী আমরা। যে সাম্প্রদায়িক রাজনীতি ও ভোট ব্যাংকের হিসেব কষছেন বিজেপির নরেন্দ্র মোদী এবং অমিত শাহ সেটা তাদের কালই হয়ে দাঁড়ায় কি না সেটাই দেখার বিষয়। কি হবে সেইসব ভারতীয় যাযাবরদের যাদের ডকুমেন্ট করতে হয়নি কোনদিন?যাদের ভারতের মাটি-পানি-বাতাস নিজের সন্তানের মত লালন পালন করে? প্রথম আঘাতটা মুসলমাদের উপর এরপর আঘাত আসবে দলিতদের উপর,আদিবাসীদের উপর নাহলে হিন্দুত্ববাদী বিজেপির হিন্দুস্তান সম্ভব নয়। সংবিধানের ৩৭০ ধারা তুলে নেওয়া তারপর নাগরিকত্ব আইন এ সবই এক মহা পরিকল্পনার অংশ। এতে ভর করেই ভারতের অর্থনীতি ধ্বংস করে ফেলা বিজেপি রাজনীতি করে যেতে চায়।
লেখাটা চমতকার। ডারউইনের প্রকৃতির সাথে লড়াইয়ের কথা প্রকৃতির বিরুদ্ধে মানুষের অবস্থানজনিত লড়াইয়ের বর্ননা মনে হয়নি আমার কাছে কখনো। মাঝে মাঝে সহাবস্থানের জন্যেও এক ধরনের লড়াই দরকার হয়। আমার মনে হয় উনি তাইই বলেছেন। লড়াই করে নিজের জায়গা করে নেয়া৷ প্রাকৃতিক নানান উপাদানের মধ্যে টিকে থাকা। এই ব্যাখ্যার প্রমান মেলে উনি যখন অভিযোজনের কথা বলেন। কি মনে হয় আপনার??
উত্তরমুছুনধন্যবাদ ভাই। ডারউইনের তত্ত্বের ব্যবহার সমাজবিজ্ঞানীরা এভাবে দেখান না বরং এটাকে যুদ্ধ হিসেবেই দেখেন। এজন্যই আমি বলেছি ব্যবহার করা হল। একটা তত্ত্বকে অন্যভাবে ব্যবহার করার কথা বলেছি মাত্র।ধন্যবাদ আবারো।
মুছুন