আমাজন থেকে সুন্দরবন
ক'দিন আগেই পৃথিবীর ফুসফুুস খ্যাত আমাজন স্বীকার হল অদ্ভুতুড়ে এক দাবানলের। স্যাটেলাইট থেকে পাওয়া ছবি দেখা যায় বনের ঠিক মাঝে বৃত্তাকার বিশাল এলাকাজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছিল আগুন। এ ব্যাপারে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জাইর বোলসোনারো পর্যাপ্ত পদক্ষেপ নিচ্ছিলেন না বলে অভিযোগ উঠেছিল আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে। (বিবিসি, সিএনএন)
★আমাজন অরণ্যের গুরুত্ব অনেক। পৃথিবীর ২০% অক্সিজেন আসে আমাজন থেকে। আমাজন পৃথিবীতে প্রাকৃতিক সপ্তাশ্চার্যের একটি। এই বনের নদী বা আমাজন নদী বেশির ভাগ নদীর উৎস। এই নদী বিশ্বে প্রচুর পানির যোগান দিয়ে থাকে। এছাড়া ৪৫ লাখ প্রজাতির পোকামাকড় আছে। এছাড়া ৪২৮ প্রজাতির উভচর, ৩৭৮ প্রজাতির সরিসৃপ এবং ৪২৭ প্রজাতির স্তনপায়ী প্রাণী আছে। এছাড়া আমাজন নদীতে ৩০০০ প্রজাতির মাছ ও জলজ প্রাণী আছে।
প্রানিকুলের সনাক্তকৃত এক দশমাংশ প্রাণী এই অঞ্চলে বাস করে।
পৃথিবীর সকল পাখির এক পঞ্চমাংশ পাখি এই বনের অধিবাসী।
গড়ে প্রতি বর্গ কিলোমিটারে প্রায় ৭৫,০০০ ধরনের বৃক্ষ পাওয়া যায়।
বিশ্বের মোট ঔষধের ২৫% কাঁচামাল আসে এ বনের মাত্র ৪০০ প্রজাতির গাছ থেকে।
এরপর আসছি নদীর কথায়....
বর্ষা মৌসুমে এ নদীর মোহনা দিয়ে প্রতি সেকেন্ডে ৫,৭৮৭,০৩৭ ঘনফুট পানি আটলান্টিকে নিক্ষিপ্ত হয়।
আমাজন নদী থেকে যে পরিমান পানি প্রতি দিনে আটলান্টিকে প্রবেশ করে তা দিয়ে পুরো নিউইয়র্ক শহরের ৯ বছরের পানির চাহিদা মেটানো সম্ভব।
পৃথিবীর মোট স্বাদু পানির এক পঞ্চমাংশ স্বাদু পানি আসে আমাজন নদী থেকে।
অতিবৃষ্টি অরণ্যের উদ্ভিদ এবং জীবজন্তুর যে পরিমাণ, আদতে তা যেকোনো বাসস্থানের চেয়ে সমৃদ্ধ। যদিও বিগত কয়েক লক্ষ কোটি বছরের জলবায়ুগত পরিবর্তনে তাদের পরিমাণ কখনও বেড়েছে কখনও কমেছে, তবুও বর্ষাবন হলো পৃথিবীর অন্যতম প্রাচীন একটি বাস্তুসংস্থান। এই ধারাবাহিকতার কারণেই অতিবৃষ্টি অরণ্যে বেড়ে উঠেছে লক্ষ কোটি প্রজাতি, যার অনেকগুলো এনডেমিক (endemic), বা একমাত্র।
তাদের মধ্যে উল্লেখ্য....
১.স্বচ্ছ ব্যাঙ
২.জেসাস গিরগিটি
৩.মাটা মাটা কাছিম
৪.বাদাম মাথার পোকা
৫.মাকড়সা বাঁদর
৬.হানি বেয়ার
৭.ক্যাপিবেরা
৮.সাইক্লোসা মাকড়সা
৯.গ্রেট পোটো
১০.গোলাপি ডলফিন
তাদের মধ্যে উল্লেখ্য....
১.স্বচ্ছ ব্যাঙ
২.জেসাস গিরগিটি
৩.মাটা মাটা কাছিম
৪.বাদাম মাথার পোকা
৫.মাকড়সা বাঁদর
৬.হানি বেয়ার
৭.ক্যাপিবেরা
৮.সাইক্লোসা মাকড়সা
৯.গ্রেট পোটো
১০.গোলাপি ডলফিন
যুক্তরাষ্ট্রের একজন বিজ্ঞানী আশংকা প্রকাশ করেছেন যে আমাজন অরণ্য আগামী ৫০ বছরের মধ্যে বিলীন হয়ে যেতে পারে। ব্যাপক অপরিকল্পিত বন নিধন ই হবে এর কারণ। পেনিসিলভেনিয়া স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ে র পরিবেশ বিজ্ঞানের অধ্যাপক জেম্স্ এল্কক বিবিসি কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এই তথ্য প্রদান করেন। তার মতে জটিল প্রতিক্রিয়া নামক পরিবেশ সম্পর্কিত প্রক্রিয়ায় এমনটা ঘটতে পারে।
এবার আসি সুন্দরবন এর কথায়...
পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভের মধ্যে সবচেয়ে অন্যতম হচ্ছে সুন্দরবন।
শুধুমাত্র পাখ পাখিই নয়, রয়েছে অনেক বন্যপ্রাণী।রয়েছ ে অসংখ্য বিষধর সাপ। শুধু তাই নয়, বিশাল আয়তনের অধিকারী সুন্দরবন আমাদের প্রকৃতিক সম্পদ। সুন্দরবনের মাঝে রয়েছে ছোট বড় প্রায় পাঁচ হাজার নদী।
গবেষকরা বলেছেন,
‘বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্র বর্তমান ও ভবিষ্যৎ নাগরিকদের জন্য পরিবেশ সংরক্ষণ ও উন্নয়ন করবেন এবং প্রাকৃতিক সম্পদ, জীববৈচিত্র্য, জলভূমি, বন ও বন্যপ্রাণীর সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা বিধান করবেন। অথচ বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের পরামর্শ উপেক্ষা করে নৌ ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সুন্দরবনের ভেতর দিয়ে স্থায়ী নৌরুট চালু করেছে।’
সুন্দরবনের ভেতর দিয়ে নৌরুট চালু থাকায় মালামাল পরিবহনে সক্ষম নয়, এমন পরিবহন চলাচল করছে। অপরিপক্ব নৌযান দ্বারা ফার্নেস ওয়েল পরিবহনের সাথে দুর্ঘটনা ঘটেছে। যেই পরিবহনে সাড়ে তিন লাখ টন ফার্নেস ওয়েল তেল ছিল। দুর্ঘটনার পর সেই তেল সুন্দরবনের শ্যালা নদী দিয়ে প্রায় ১৪০ কি.মি এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে।
শুধুমাত্র পাখ পাখিই নয়, রয়েছে অনেক বন্যপ্রাণী।রয়েছ
গবেষকরা বলেছেন,
‘বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্র বর্তমান ও ভবিষ্যৎ নাগরিকদের জন্য পরিবেশ সংরক্ষণ ও উন্নয়ন করবেন এবং প্রাকৃতিক সম্পদ, জীববৈচিত্র্য, জলভূমি, বন ও বন্যপ্রাণীর সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা বিধান করবেন। অথচ বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের পরামর্শ উপেক্ষা করে নৌ ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সুন্দরবনের ভেতর দিয়ে স্থায়ী নৌরুট চালু করেছে।’
সুন্দরবনের ভেতর দিয়ে নৌরুট চালু থাকায় মালামাল পরিবহনে সক্ষম নয়, এমন পরিবহন চলাচল করছে। অপরিপক্ব নৌযান দ্বারা ফার্নেস ওয়েল পরিবহনের সাথে দুর্ঘটনা ঘটেছে। যেই পরিবহনে সাড়ে তিন লাখ টন ফার্নেস ওয়েল তেল ছিল। দুর্ঘটনার পর সেই তেল সুন্দরবনের শ্যালা নদী দিয়ে প্রায় ১৪০ কি.মি এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে।
সুন্দরবন এলাকার রামমঙ্গল নদীপথ দিয়ে পড়শি রাষ্ট্র ভারতের জাহাজগুলো প্রতিদিন বাংলাদেশে প্রবেশ করে। বজবুজা নদী হয়ে অঙ্গতিহারা চেকপোস্ট দিয়ে এসব জাহাজ মংলাবন্দরের দিকে যাচ্ছে। জানা যায়, বজবুজা নৌপথ দিয়ে প্রতিদিন গড়ে ভারতের ১৫টি জাহাজ চলাচল করে। নৌপথে যানবাহন চলাচলের কারণে প্রতিনিয়ত শব্দ দূষণ হচ্ছে। শব্দ দূষণ প্রতিটি প্রাণীর জন্য মারাত্মক ব্যাধি। শ্যালা নদীতে ছড়িয়ে পড়া তেল নিষ্কাশনের ব্যবস্থা গ্রহণ এবং রামপাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প, সুন্দরবনের পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য ধ্বংসকারী সব উন্নয়ন প্রকল্প স্থানান্তর করতে হবে। সুন্দরবনের মাঝে নৌরুট বন্ধ ঘোষণা করতে হবে। পৃথিবীর সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ সুন্দরবন জীববৈচিত্র্য ও প্রাকৃতিক পরিবেশ আজ বিরাট হুমকির মুখে। এসব নৌপথ দিয়ে অব্যাহত বর্জ্য নিক্ষেপ ও বিকট সাইরেনের কারণে নানারকম ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। বিভিন্ন জরিপের মাধ্যমে দেখা যায়, গত ৩৭ বছরে ১৪৪ কিলোমিটার আয়তন হারিয়ে গেছে।অথচ দেশের বনাঞ্চলের ৫১ ভাগই হলো সুন্দরবনে।
পৃথিবীর যেকোন বন, সুন্দরবন কিংবা আমাজন তা কোন রাষ্ট্র কিংবা প্রতিষ্ঠানের মালিকানায় থাকতে পারেনা,এগুলো পৃথিবীর যাবতীয় মানুষের, যাবতীয় প্রানীর সম্পত্তি। এগুলোর ওপর অধিকার যেমন পৃথিবীর সবার তেমন এগুলো রক্ষা করার দায়িত্বও পৃথিবীর সকল মানুষের।
তথ্যসূত্রঃ
বিবিসি,সিএনএন,প্রথম আলো,মানবজমিন, বাংলাদেশ প্রতিদিন এবং অনলাইন।
পৃথিবীর যেকোন বন, সুন্দরবন কিংবা আমাজন তা কোন রাষ্ট্র কিংবা প্রতিষ্ঠানের মালিকানায় থাকতে পারেনা,এগুলো পৃথিবীর যাবতীয় মানুষের, যাবতীয় প্রানীর সম্পত্তি। এগুলোর ওপর অধিকার যেমন পৃথিবীর সবার তেমন এগুলো রক্ষা করার দায়িত্বও পৃথিবীর সকল মানুষের।
তথ্যসূত্রঃ
বিবিসি,সিএনএন,প্রথম আলো,মানবজমিন, বাংলাদেশ প্রতিদিন এবং অনলাইন।
Post a Comment